নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার সরকারি অফিসগুলোতে ওয়েবসাইটে আপডেট তথ্য না থাকায় সঠিক তথ্য পাওয়া থেকে বঞ্চিত রয়েছে উপজেলার মানুষ। ফলে একদিকে নাগরিকরা ভুল তথ্য পাচ্ছেন। যার ফলে অনেকটা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে সরকারের এ মহতি উদ্যোগ।

রায়পুরা উপজেলার সরকারী ওয়েব পোর্টালে হ-য-ব-র-ল অবস্থায় রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে তথ্য সংশোধনী না থাকায় বর্তমান তথ্যপ্রযুক্তির যুগে বিভ্রান্তিতে পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। ওয়েবসাইটটি নিয়মিত আপডেট না হওয়ায় স্থানীয় জনসাধারণের পাশাপাশি গণমাধ্যমকর্মীরাও সঠিক তথ্য পেতে প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে অফিসগুলোকে ওয়েবসাইট খোলার নির্দেশনা দিলে বাধ্যতামূলক ওয়েবসাইট খোলা হয়। সেইসাথে এসব ওয়েবসাইটে প্রথমে কিছু তথ্য সন্নিবেশন করা হয়। পরে আর নিয়মিত হালনাগাদ তথ্য সংযোজন করেননি অধিকাংশ অফিস।

ওয়েব পোর্টালের উল্লেখযোগ্য কয়েকটি ভুলের মধ্যে জনপ্রতিনিধিদের তালিকায় টানা সাতবারের সাংসদ সাবেক মন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজুর মোবাইল নাম্বার, পৌরসভার মেয়র মোঃ জামাল মোল্লার মোবাইল নাম্বার ভুল। উপজেলা পরিষদের মাসিক কর্মসূচী, মাসিক নোটিশ সমূহ, মাসিক সভার কার্যবিবরনীর ক্যাটাগরিতে সর্বশেষ আপডেট দেখাচ্ছে আগস্ট ২০১৭ সালের। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্যাটাগরিতে কলেজের স্থানে নামমাত্র ২টি কলেজের নাম দেওয়া থাকলেও উপজেলায় অর্ধশতাধিক মাধ্যমিক বিদ্যালয় থাকা সত্বেও পোর্টালে কোন বিদ্যালয়ের নামই নেই। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্যাটাগরিতেও একই অবস্থা। দুই শতাধিক বিদ্যালয় থাকলেও পোর্টালে শুধুমাত্র একটি বিদ্যালয়ের নাম দেওয়া আছে। অসংখ্য মাদ্রাসা থাকলেও এখানে কোন মাদ্রাসার নামই নেই। এনজিও ক্যাটাগড়িতে ব্রাক ছাড়া আর কোন এনজিও নাম নেই। ব্যাংক, বীমার ক্যাটাগড়ি ফাঁকা। এছাড়াও সমাজ সেবা কার্যালয়, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তার কার্যালয়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সহ প্রায় সবকটি দপ্তর অধিদপ্তরের প্রাক্তন অফিস প্রধানগণের ক্যাটাগড়িতে কোন কর্মকর্তার নাম পাওয়া পায়নি। সাব রেজিষ্টার নোয়াজ মিয়া, রায়পুরা থানার অফিসার ইনচার্জ মহসিনুল কাদির, অফিসার ইনচার্জ তদন্ত লুৎফুর রহমান, উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আঃ ফ ম আরাফাত ও খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা বুলবুল আহম্মদ ওনারা গত ৪/৫ মাস পূর্বে অন্যত্র বদলী হয়ে গেলেও সেখানে তারই ছবিসহ তথ্য বিদ্যমান। শুধু তাই নয়, থানার ওয়েব সাইটে কর্মচারীবৃন্দের ক্যাটাগড়িতে দীর্ঘদিন পূর্বে অন্যত্র বদলী হয়ে যাওয়া কর্মচারীদের নাম এখনো বিদ্যমান।

এছাড়া রায়পুরা উপজেলার এ ওয়েবসাইটে রায়পুরা প্রেসক্লাব বা সাংবাদিকদের নামে কোন ক্যাটাগড়ি খুজে পাওয়া যায়নি। ওয়েব পোর্টালের তালিকায় হাট বাজারের সংখ্যায় ভুল।

উপজেলার অন্যান্য ছোট দপ্তর-অধিপ্তর, প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটের কথা নাইবা বল্লাম, উপজেলা পরিষদের গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরগুলোর ওয়েব সাইটেই ভুলে ভরপুর। প্রধান দপ্তরগুলোর ওয়েবসাইটের তথ্যে যদি এমন ভুলে ভরা হয় তাহলে শাখা-প্রশাখার সাইটগুলো কি অবস্থা হবে এমন মত প্রকাশ করেন স্থানীয় মচেতন মহল।

সরকারী ওয়েবসাইটে অসংখ্য ভুলের বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার ভূমিকে প্রেসক্লাবের একটি মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকগণ অবহিত করলেও অদ্যাবদি কোন আপডেট হয়নি।

এ বিষয়ে রায়পুরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আজগর হোসেন বলেন, সরকারী ওয়েবসাইটে উপজেলার অংশ টুকু তো আমি আপডেট করেছি। অন্যকোন দপ্তরের ওয়েবসাইট হয়তো কিছুটা অসম্পূর্ণ থাকতে পারে। কিন্তু প্রত্যেকটা দপ্তর এখন তাদের নিজস্ব আলাদা আইডি পাসওয়ার্ড দিয়ে ওয়েবপোর্টাল মেনটেন করে। তাই আমরা নিজেরা অন্যদেরটা আপডেট করতে পারি না। কিন্তু আমি চিঠি দিয়ে সব দপ্তরকে হালনাগাদের জন্য বলেছি।